কফি খেলে যেমন শরীর সতেজ থাকে আবার কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় আছে। অনেক সময় এক কাপ কফি খেলে যেমন মাথা ধরা এক নিমিষেই ঠিক হয়ে যায় আবার কফি দিয়ে রূপচর্চা করাও যায়। তাই কফিকে অনেকেই জাদুকারী পানীয় বলে থাকেন। শীতকালে কিংবা বর্ষাকালে যেকোনো ঋতুতেই, যেকোন অনুষ্ঠানেই এক কাপ কফি আর আড্ডা দারুণ জমে ওঠে। তাছাড়া কফির যে কত উপকারিতা আছে তা বলে শেষ করা যাবে না।
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় খুবই সহজ। রূপচর্চায় কফির ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ|কফি হচ্ছে একটি এমন উপাদান যা দিয়ে আপনি রূপচর্চাও করতে পারেন। ব্রণ দূর করতে কফি বেশ উপকারী ভূমিকা পালন করে। কফি দিয়ে রূপচর্চা তো বটেই কফি অয়েল ত্বকের কালো দাগ, স্টেজ মার্ক, ফুসকুড়ি ইত্যাদি দূর করে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে ফলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। অনেকেই কালো থেকে ফর্সা হতে চায় আর কফি হলো কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়।
Table of Contents
বহু মানুষই সকালবেলা কফি দিয়ে তাদের ব্রেকফাস্ট সারেন। আবার কফির পাউডার দিয়ে রূপচর্চা খুবই উপকারী ও কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। সকালবেলা এক কাপ কফি শরীরের মধ্যে যেমন তাৎক্ষণিক শক্তি নিয়ে আসে, তেমনি ত্বকের বহু সমস্যার সমাধান করতে কফির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাই আজকে আমি এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার ১০ টি উপায় আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব।
#১. মুখের ক্লিনজার হিসাবে কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার জন্য আমাদের মুখ অবশ্যই প্রতিদিন সকালে ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। আর প্রাকৃতিক উপায়ে যদি ক্লিনজার তৈরি হয় তাহলে আমাদের ত্বক অনেক বেশি তরতাজা ও সতেজ থাকে। আমাদের ত্বকে এই কফির তৈরি প্রাকৃতিক ক্লিনজার খুব ভালো কাজ করে ও প্রভাব ফেলে। প্রাকৃতিকভাবে মুখকে উজ্জ্বল করতে কফির তৈরি ক্লিনজার খুবই কার্যকরী।
কফির ক্লিনজার তৈরি করার জন্য আপনার যা উপকরণ লাগবে:
এক টেবিল চামচ কফি এবং এক চামচ দুধের সর।
কিভাবে উপকরণটি ব্যবহার করবেন:
মুখ হালকা উষ্ণ গরম জলে ভালো করে ধুয়ে তারপর মুখটি কাপড় দিয়ে মুছে, এক টেবিল চামচ কফি ও এক চামচ দুধের সর একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। আপনি মুখে, ঘাড়ে, গলায় হালকা হাতে আস্তে আস্তে ৩০ সেকেন্ড মাসাজ করুন। এরপর নরমাল জল দিয়ে ভালো করে মুখটা ধুয়ে নিন।
কতবার ব্যবহার করবেন:
আপনি এক সপ্তাহে তিন-চার দিন এটি ব্যবহার করুন অপনার ত্বক অবশ্যই প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা ও উজ্জ্বল এবং চকচকে হয়ে উঠবে।
#২. মুখের স্ক্রাব হিসেবে রূপচর্চায় কফির ব্যবহার
আমরা সবাই একটি চকচকে সুন্দর উজ্জ্বল ত্বক পছন্দ করি কিন্তু বাজারে প্রচলিত নানা ধরনের স্ক্রাব ব্যবহার করে আমারা মুখের স্কিন অনেক বেশি খসখসে ও অমসৃণ করে ফেলি। তাই আমরা বাড়িতেই যদি কফির সঙ্গে কয়েকটি উপাদান দিয়ে রাব বানিয়ে ত্বকে মাখি তাহলে খুব সহজেই ভালমতন আমাদের ত্বক অনেক বেশি উজ্জ্বল ও ফর্সা হবে। এটি ব্যবহার করাও যেমন সহজ তেমনি আপনি যেকোন সময় ঘরে বসে এই মুখের স্ক্রাব বানিয়ে ফেলতে পারবেন।
কফি স্ক্রাব তৈরি করার জন্য আপনার যা উপকরণ লাগবে :
কফি স্ক্রাব তৈরি করতে এক টেবিল চামচ কফি ও এক চামচ এলোভেরা জেল এবং এক চামচ চিনি।
কিভাবে কফি স্ক্রাব ব্যবহার করবেন:
উপরে উল্লেখিত সবগুলো উপাদান ভালো করে একসাথে একটি পাত্রে মিশিয়ে নিন। এরপরে মুখটি ভালো করে ধুয়ে নিন এবং শুকনো কাপড় দিয়ে হালকা করে মুখটা ধুয়ে মুছে নিন। কিছু সময় পর পাত্রে মিশিয়ে রাখা তিনটি উপাদান ( উপরে উল্লেখিত) আপনি মুখে, ঘাড়ে, গলায় হালকা হাতে মেখে আস্তে আস্তে দুই থেকে আড়াই মিনিট মাসাজ করুন। এরপর নরমাল জল দিয়ে ভালো করে মুখটা ধুয়ে নিন।
কতবার কফি স্ক্রাব ব্যবহার করবেন:
আপনি কফি দিয়ে তৈরি এই স্ক্রাবটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন।
#৩.মুখের মাস্ক হিসেবে কফি
একটি অসাধারণ মুখের মাস্ক হল কফির তৈরি মুখের মাস্ক। এই কফির তৈরি মুখের মাস্ক ব্যবহার করলে আপনার ত্বক উজ্জ্বল মসৃণ ও গোলাপী হয়ে উঠবে কয়েকদিনের মধ্যে। যদি আপনি কফির মাস্ক মুখে ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মুখের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাবে ফলত আপনার মুখ ও গাল গোলাপি হবে এবং মুখের গ্লেজ বৃদ্ধি পাবে অর্থাৎ কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় হিসেবে শুধুমাত্র ঐ তিনটি উপকরণ ব্যবহার করতে পারেন।
কফির মাস্ক তৈরি করার জন্য আপনার যা উপকরণ লাগবে:
কফির মাস্ক তৈরি করতে গেলে এক চামচ কফির পাউডার, এক চামচ বেসন, এক চামচ গোলাপ জল ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে ব্যবহার করবেন কফি মাস্ক:
উপরে উল্লেখিত মিশ্রণ গুলিকে একসাথে মিশিয়ে নিয়ে আপনার গলায়, হাতে, ঘাড়ে, মুখে আঙুল দিয়ে বা একটা ব্রাশের সাহায্যে লাগিয়ে রাখতে হবে। ৮ থেকে ১০ মিনিট এই মিশ্রণটি আপনার স্কিনে লাগিয়ে রাখতে হবে। এরপর ঐ কফির মাস্কটি হালকা শুকনো হয়ে গেলে বা স্কিনে হালকা টান টান অনুভব করলে আপনি নরমাল জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন।
কফির মাস্ক কতবার ব্যবহার করবেন:
কফি দিয়ে তৈরি এই দুর্দান্ত মাস্কটি আপনি প্রতি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করতে পারেন। এরকম ভাবে কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করলেই দেখবেন আপনার স্কিন উজ্জ্বল মসৃণ হয়ে উঠবে সঙ্গে স্কিনের গ্লেজ বৃদ্ধি পাবে।
#৪.বডি স্ক্রাব হিসেবে কফি দিয়ে রূপচর্চা
কফি দিয়ে রূপচর্চা করার এক অন্যতম উপায় হল কফির তৈরি বডি স্ক্রাব। এটি তৈরি করা যেমন সহজ এবং খরচও কম কিন্তু এর ফলাফল খুবই ভালো। আপনি বাড়িতে বসেই কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার এই উপায় ব্যবহার করতে পারেন।
কফির বডি স্ক্রাব তৈরি করার জন্য আপনার যা উপকরণ লাগবে:
কফির বডি স্ক্রাব তৈরি করার জন্য ১ টেবিল চামচ কফির গুঁড়ো ও ১ টেবিল চামচ নারকেল তেল আপনি ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে ব্যবহার করবেন কফির বডি স্ক্রাব:
আপনার মুখটি ভালো করে ধুয়ে ও শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এইবার কফির গুঁড়ো ও নারকেল তেল এই দুইটি উপাদান ভালো করে মিশিয়ে ,আপনার স্কিনে লাগান এরপর ধীরে ধীরে আপনার স্কিনের ওই অংশে স্ক্রাব করুন। বিশেষ করে যে অংশ আপনার কালো হয়ে আছে, যেমন আপনার হাঁটু কাঁধ কনুই গলা ইত্যাদি।
এরপর ৮ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন যখন আপনার স্কিনের ঐ অংশগুলো টানটান অনুভব হবে তারপর নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। মনে রাখবেন জল দিয়ে ধুয়ে ফেলার পর আপনার শরীরের কোনো অংশে কোনো ধরনের ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেই। কারণ নারকেল তেলের মধ্যেই আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করার প্রয়োজনীয় উপাদান আছে, যা ভালোভাবে এখানে কাজে দেবে।
কফির বডি স্ক্রাব কতবার ব্যবহার করবেন:
কফি দিয়ে তৈরি এই দুর্দান্ত কফির বডি স্ক্রাব আপনি প্রতি সপ্তাহে ২ থেকে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন। এরকম ভাবে কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করলেই দেখবেন আপনার স্কিন উজ্জ্বল মসৃণ হয়ে উঠবে সঙ্গে স্কিনের গ্লেজ বৃদ্ধি পাবে যা দেখে আপনি আনন্দ উপভোগ করবেন।
#৫. ডার্ক সার্কেল বা কালো দাগ দূর করতে কফির ব্যবহার–
আমাদের চোখের নীচে কালো দাগ থাকলে আমাদের একেবারেই ভালো লাগেনা। কফি দিয়ে চোখের নীচের কালো দাগ করার খুব একটি ভালো উপায় আপনাদের জানাবো। তাই অবশ্যই এই মিশ্রণটি ব্যবহার করে যেকোনো ডার্ক সার্কেল বা কালো দাগ দূর করে আপনার ত্বককে সুন্দর ও উজ্জ্বল করে তুলতে পারবেন।
মিশ্রণটি তৈরি করার জন্য আপনার যা উপকরণ লাগবে:
এই মিশ্রণটি তৈরি করতে আপনার ১ চামচ কফি পাউডার ও ১ চামচ এলোভেরা জেল এবং এক চামচ নারিকেল তেল প্রয়োজন হবে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন এই মিশ্রণটি;
উপরে উল্লেখিত তিনটি উপাদান আপনি একত্রে মিশিয়ে নিজের চোখের নিচে হালকা হালকা করে মেখে নিন। তবে তার আগে অবশ্যই নরমাল জলে আপনার মুখটি ভালো করে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নেবেন। মিশ্রণটি লাগিয়ে চোখ বন্ধ করে 20 মিনিট শুয়ে থাকুন এবং কিছুক্ষন পর নরমাল জল দিয়ে মিশ্রণটি ধুয়ে ফেলুন তাহলেই হয়ে যাবে।
কতবার ব্যবহার করবেন:
যদি আপনি এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে চান এবং একটি ভালো ফলাফল উপভোগ করতে চান তাহলে প্রতি সপ্তাহে ৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
#৬. ঠোঁটের স্ক্রাব হিসেবে কফির ব্যবহার-
গোলাপি ও নরম ঠোঁট কার না পছন্দ? কিন্তু এই ধরনের রূপ পেতে অনেকেরই সমস্যা হয়। সেই সমস্যার সমাধানের জন্যই আপনি আমাদের এই ঠোঁটের স্ক্রাবটি ব্যবহার করতে পারেন। অতি সহজে তৈরি এই স্ক্রাবটি আপনার ঠোঁটের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষকে দ্রুত ঠিক করে আপনার ঠোঁটের রং গোলাপি করবে এবং এই স্ক্রাবটি ব্যবহার করতে যে মধু ব্যবহার হয়, সেই মধু ঠোঁটের ব্যাকটেরিয়া ও অতিরিক্ত শুষ্কতাকে প্রতিরোধ করে ঠোঁটকে সুন্দর ও উজ্জ্বল করে তুলবে।
ঠোঁটের স্ক্রাব তৈরি করার জন্য যে উপকরণগুলো আপনার লাগবে:
আপনার ঠোঁটকে সুন্দর গোলাপী ও উজ্জ্বল করে তুলতে এই উপকরণ তৈরিতে শুধুমাত্র এক চামচ মধু, এক চামচ কফি পাউডার প্রয়োজন হবে।
ঠোঁটের জন্য কফি স্ক্রাব কিভাবে ব্যবহার করবেন:
প্রথমে আপনার ঠোঁটটি নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন। তারপর এক চামচ মধু, এক চামচ কফি পাউডার এই দুটি উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ঠোঁটে লাগান। এরপর ধীরে ধীরে আঙ্গুল দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসেজ করুন। ৩ মিনিট পর্যন্ত অপেক্ষা করুন তারপর পর ধুয়ে ফেলুন। ঠোঁটটি ধুয়ে নেওয়ার পর হালকাভাবে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিয়ে যেকোনো ভালো মানের একটি লিপবাম বা ঘরের তৈরি লিপবাম ব্যবহার করতে পারেন, তাতে আপনি আরো অনেক বেশি ভালো ফল পাবেন।
কতবার ব্যবহার করবেন:
ঠোঁটের কালো দাগ দূর করে ঠোঁটকে উজ্জ্বল ও গোলাপি রং করে তুলতে আপনি প্রতিদিন রাত্রেবেলা একবার করে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুন: কালো থেকে ফর্সা হওয়ার উপায়
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন 20 টি কার্যকরী হেয়ার কেয়ার টিপস
#৭. বয়সের ছাপ দূর করতে কফি দিয়ে রূপচর্চা:
আমাদের অনেকেরই অল্প বয়সে বিশেষ করে মুখে বয়সে ছাপ পড়ে যায়। আমরা বিভিন্ন উপায় খুঁজি এই বয়সের ছাপকে দূর করার জন্য কিন্তু কিছুতেই তা দূর করতে পারি না। সেই সমস্যার সমাধানের জন্যই আপনারা এই মিশ্রণটি ব্যবহার করলে অতি দ্রুত ও সহজেই বয়সের দাগ বা ছাপ দূর করতে পারবেন।
বয়সের ছাপ সরাতে কফির যে উপকরণ লাগবে:
অল্প বয়সেই বয়সের ছাপ দূর করতে এক চামচ কফি পাউডার, এক চামচ এলোভেরা জেল, এক চামচ দুধ ব্যবহার করতে পারেন যা আপনাদের জোগাড় করতে খুব কষ্ট হবে না তা আশা করি।
কিভাবে ব্যবহার করবেন :
এই মিশ্রণটি ব্যবহার করার পূর্বে আপনাকে প্রথমেই ভালো করে মুখটি নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর শুকনো কাপড় দিয়ে মুখটিকে মুছে নিতে হবে। এবার কফি পাউডার, এলোভেরা জেল, দুধ দিয়ে তৈরি মিশ্রণটি ভালো করে আস্তে আস্তে মুখ গলা ঘাড় হাত পা এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত অংশে লাগিয়ে ১০ মিনিট রাখতে হবে। ১০ মিনিট পর বা যখন মুখের স্ক্রিনে হালকা টান ধরবে তখন নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে। তাহলেই দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে আপনার ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা হয়ে উঠেছে।
কতবার ব্যবহার করবেন:
বয়সের ছাপ দূর করতে এই মিশ্রণটি খুবই ভালো কাজ দেয়। যদি আপনি সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করেন তাহলে কয়েক সপ্তাহ পরেই এর সুফল পাবেন। আশা করি এই মিশ্রণটি আপনাকে নিরাশ করবে না।
#৮. রোদে পোড়া দাগ দূর করতে কফির ব্যবহার
প্রতি বছর বছর পৃথিবীর উষ্ণতা বেড়েই যাচ্ছে, বাড়ছে প্রচন্ড গরম আর রোদের তীব্রতা। আর এই রোদের তীব্রতার কারণেই আমাদের স্কিন রোদে পোড়া হয়ে যাচ্ছে। তাই রোদে পোড়া দাগ দূর করে ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলতে কফি খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
রোদে পোড়া দাগ দূর করতে যে উপকরণ আপনার লাগবে:
রোদে পোড়া দাগ দূর করতে আপনি এক চামচ লেবুর রস, এক চামচ কফি পাউডার ,এক চামচ টক দই ব্যবহার করতে পারেন যা অতি সহজলভ্য।
কিভাবে ব্যবহার করবেন এই মাস্কটি:
কফি পাউডার, লেবুর রস, টক দই এই তিনটি জিনিসকে একত্রিত করে একটা মিশ্রণ বানিয়ে ফেলুন। এবার আপনার মুখটি ভালো করে নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন ও শুকনো একটি কাপড় দিয়ে মুখটিকে আলতো করে মুছে নিন। মুখটিকে মুছে নেওয়ার পর ঐ মিশ্রণটি এবার ভালো করে মুখে লাগিয়ে নিন। এবার ৮ থেকে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন। মুখটিতে ঐ মিশ্রণটি ভালো করে শুকিয়ে যাওয়ার পর আপনি এবার নরমাল জল দিয়ে মুখটিকে ভালো করে ধুয়ে নিন এবং শুকনো কাপড় দিয়ে মুখটিকে মুছে নিন তাহলেই হয়ে যাবে।
কতবার ব্যবহার করবেন:
রোদে পোড়া দাগ দূর করতে এবং ভালো ফল পেতে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করতে ও সুন্দর দেখতে সপ্তাহে একদিন বা অন্তত দশ দিন অন্তর অন্তর মাসে কমপক্ষে ৩ দিন এই মিশ্রণটি অবশ্যই ব্যবহার করুন।
#৯.ব্রণ দূর করতে কফি দিয়ে রূপচর্চা
আমরা অনেকেই বয়সন্ধিকালে বা তার পরেও ব্রণের সমস্যায় ভুগি। এই ব্রণের সমস্যা দূর করতে কফির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তা হয়তো আমরা অনেকেই জানিনা। আর এই ব্রণের সমস্যার সমাধানের জন্য আজকে নিয়ে এসেছি আপনাদের কাছে একটি ভালো উপায়। আপনারা হয়তো জানেন কফিতে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান স্কিনের ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। যদি আপনি মুখের ব্রণের দাগ দূর করে ও ব্রণ ওঠা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে কফি দিয়ে রূপচর্চার এই উপায়টি অবশ্যই দেখে নিন।
ব্রণ দূর করতে যে মিশ্রণটি আপনার লাগবে:
মুখের ব্রণের সমস্যা দূর করে, মুখকে উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তুলতে আপনি ২ চামচ কফি পাউডার, ১ চামচ বেসন, ১ চামচ মধু , ২ চামচ এলোভেরা জেল ব্যবহার করতে পারেন।
কিভাবে আপনার ত্বকে মিশ্রণটি ব্যবহার করবেন:
প্রথমে আপনি কফি পাউডার, বেসন, মধু , এলোভেরা জেল দিয়ে একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এরপর মুখটি নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে একটি শুকনো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিন। এবার আপনার মুখের যে যে স্থানে বর্ণ হয়েছে সেইসব স্থানগুলিতে এই মিশ্রণটি লাগিয়ে রাখুন। প্রয়োজনে আপনি সম্পূর্ণ মুখেও লাগাতে পারেন, তাতে কোন অসুবিধা নেই। এরপর ১০ থেকে ১২ মিনিট অপেক্ষা করুন। মিশ্রণটি আপনার মুখে শুকিয়ে গেলে নরমাল জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন এবং শুকনো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে আলতো করে মুছে নিন। এইভাবে কয়েক সপ্তাহ ব্যবহার করুন দেখবেন আপনার মুখের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং আপনার ব্রণের সমস্যাও মিটে যাবে, নতুন করে আর মুখে ব্রণ হবে না।
মিশ্রণটি কতবার ব্যবহার করবেন:
মুখের ব্রণের সমস্যা দূর করতে সপ্তাহে অন্তত একবার ব্যবহার করুন এই মিশ্রণটি। তবে যাদের ব্রণের সমস্যা অধিক রয়েছে তারা সপ্তাহে অন্তত ৩ বার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে ভালো ফল পাবেন।
#১০. কফি দিয়ে হাত-পা ফর্সা করার উপায়
মুখের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি আপনারা কফি দিয়ে হাত পা ফর্সা করতে পারেন, সেই উপায়ও আজকে আপনাদের কাছে তুলে ধরবো। মূলত কোমল সুন্দর উজ্জ্বল স্কিন পেতে কফির ভূমিকা খুবই ভালো। ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি এই উপাদানটির মাধ্যমে আপনি অতি সহজেই কফি দিয়ে হাত বা ফর্সা করতে পারেন।
হাত ও পা ফর্সা করতে যে মিশ্রণটি আপনাদের লাগবে:
এই মিশ্রণটি তৈরি করতে আপনাদের প্রথমেই এক চামচ কফি পাউডার সবার আগে প্রয়োজন এছাড়া এক চামচ শসার রস, এক চামচ হলুদ গুঁড়ো এক চামচ লেবুর রস প্রয়োজন হবে।
কিভাবে মিশ্রণটি ব্যবহার করবেন:
এই মিশ্রণটি তৈরি করার মূল উপাদান বা প্রাথমিক উপাদান হলো কফি যা আপনাকে বা আপনার ত্বককে উজ্জ্বল ও ফর্সা করে তুলবে। প্রথমেই কফি পাউডার, শসার রস, হলুদ গুঁড়ো, লেবুর রস দিয়ে একটি মিশ্রণ বাড়িয়ে ফেলুন। এরপর আপনার মুখটি ভালো করে নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে নিন বা আপনি দেহের যে অংশে এই মিশ্রণটি লাগাতে চান সেই অংশটিও ভালো করে নরমাল জল দিয়ে ধুয়ে নিন এবং শুকনো ও পরিষ্কার কাপড় দিয়ে সেই অংশটি ভালো করে মুছে নিন।
এইবার এই মিশ্রণটি ব্যবহার করার সময় এসেছে। মিশ্রণটিকে ভালো করে হাতে পায়ে সমস্ত জায়গায় লাগিয়ে হালকা করে মাসাজ করুন এবং ১০ থেকে ১২ মিনিট লাগিয়ে রাখুন। হালকা হালকা টান ধরলে আপনি এবার নরমাল জলে মিশ্রণটি ধুয়ে ফেলুন। এইভাবে কয়েক দিন করলেই ভালো ফল পাবেন।
মিশ্রণটি কতবার ব্যবহার করবেন:
এই মিশ্রণটি প্রতিদিন ব্যবহার করার জন্য নয়। মিশ্রণটি নিয়ম করে ব্যবহার করলে আপনি অসাধারণ ফল পাবেন। এই মিশ্রণটি আপনি মাসে অন্তত কমপক্ষে ৩ বার ব্যবহার করুন। তাহলেই কফির তৈরি এই মিশ্রণটির প্রভাবে আপনার ত্বক ফর্সা হয়ে উঠবে।
ফর্সা হওয়ার ঘরোয়া আরো কিছু উপায় সম্পর্কে আপনারা যদি জানতে চান তাহলে কমেন্ট করে জানতে পারেন।
কফি দিয়ে কি একদিনে ফর্সা হওয়া যায় ?
উপরে আলোচনায় আমি কফির নানা ধরনের মিশ্রণ নিয়ে আলোচনা করেছি।সেগুলো বাড়িতে ব্যবহার করলেই ফর্সা হতে পারবেন। তবে একদিনে ফর্সা হওয়া কোন পদ্ধতিতেই প্রাকৃতিকভাবে সম্ভব নয় কিন্তু উপরের মিশ্রণটি ব্যবহার করলে ধীরে ধীরে আপনি প্রাকৃতিকভাবে সুফল পাবেন।
কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় কি ?
এই ব্লগে আমি কফির নানা ধরনের মিশ্রণ নিয়ে আলোচনা করেছি এবং আলোচনা করেছি কিভাবে সেগুলো ব্যবহার করতে হবে ও কিভাবে সেগুলি সুফল দেবে।সেগুলো বাড়িতে ব্যবহার করলেই আপনি অল্প দিনেই ফর্সা হতে পারবেন।
Disclaimer: উপরোক্ত বিষয়গুলো মানতে sangbad10 কাউকে বাধ্য বা অনুরোধ করে না। নিজের বিচার বুদ্ধি সহযোগে সিদ্ধান্ত নিন। ব্যবহারিক প্রয়োগের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
4 thoughts on “কফি দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায় ১০ টি। কফি দিয়ে রূপচর্চা”