আমরা যারা চিকেন লাভার তাদের সমস্যায় পড়তে হতে পারে (Chicken shortage in West Bengal)। চিকেন খেতে আমরা অনেকেই ভালোবাসি। চিকেন কষা, চিকেন সুপ, চিকেনের ঝোল, চিকেন চাওমিন, চিকেন বিরিয়ানি নানাধরনের রসনা তৃপ্ত খাবার আমরা খেয়ে থাকি কিন্তু সেই চিকেনের যদি আকাল হয়। তাহলে সমস্যা কিন্তু সকলেরই।
কিন্তু যদি খবর আসে বাজারে আর চিকেন বা মুরগির মাংস পাওয়া যাবে না তাহলে চিকেন লাভার হিসাবে আপনার কেমন মনে হতে পারে? হ্যাঁ সত্যি সূত্রের খবর আজকের মধ্যরাত্রের পর থেকে চিকেন সরবরাহকারী সংস্থা বাংলায় চিকেন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই পোলটি মুরগি সরবরাহকারী সংস্থা জানিয়েছে আজকের মধ্যরাতের পর থেকে তারা আর পল্টি মুরগি বাংলায় নিয়ে আসবে না।
আপনি যে অংশ পড়তে চান, নিন্মে সেই অংশে ক্লিক করুন
কেন এমন হলো?
এখন প্রশ্ন হল কেন পোল্ট্রি মরগ মুরগি সরোবরাকারী সংস্থা বাংলায় চিকেন সরবরাহ করতে করা বন্ধ করে দিতে চাইছে। ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা-তে। কয়েকদিন আগে পশ্চিম মেদিনীপুরে বেলদা থানার অন্তর্গত এক সড়ক পথ দিয়ে পল্টি মুরগি সরবরাহকারী এক সংস্থার পোল্টি বোঝাই গাড়ি আসছিল। ওই পোলটি সরবরাহকারি গাড়িটির ড্রাইভার ছিলেন সমীর ঘোষ।
ওই সমীর ঘোষ ও পোল্টি সরবরাহকারী কোম্পানির অভিযোগ তাদের পোল্ট্রি বোঝাই গাড়ি যখন পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থানায় প্রবেশ করে তখন ওই থানার পুলিশ তাদের আটকায় ও গাড়ির কাগজপত্র চেক করে। কিন্তু গাড়ির কাগজপত্র ঠিক থাকা সত্ত্বেও গাড়ির ড্রাইভারের কাছে অবৈধভাবে মোটা টাকা দাবি করে। কিন্তু ওই ড্রাইভার সেই অবৈধ মোটা টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাকে যথেষ্ট মারধর করা হয় এবং এমনকি তার মাথাতেও আঘাত করা হয়, পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সমীর ঘোষ ও পোল্ট্রি সংস্থা জানায় তাদের ওই পোল্টি গাড়ি বোঝাইটি কোথা থেকে আসছিল কোথায় যাবে এবং গাড়ি যাবতীয় সমস্ত পেপার থাকা সত্ত্বেও তার ওপর এরকম চড়াও হয় পুলিশ ও মোটা টাকা দাবি করে। শালবনীর অধিবাসী সমীর ঘোষ এই মোটা টাকা দিতে অস্বীকার করে কারণ তার কাছে বৈধ ডকুমেন্টস ও লাইসেন্স সমস্ত কিছুই ছিল। সমীর ঘোষ বলেন তার যদি কোন ভুল থাকে তাহলে আইন অনুযায়ী তাকে ফাইন করেন কিন্তু পুলিশ তার কোন কথা না শুনে তাকে মারধর করে ও মোটা টাকা দাবি করে।
এখন গাড়ি চালকের বর্তমান অবস্থা কি?
সমীর ঘোষের অভিযোগ মোটা টাকা দিতে অস্বীকার করায় তাকে যথেষ্ট মারধর করা হয় এমনকি তার মাথায় গুরুতর আঘাত লাগে। প্রথমে তাকে বেলদা হসপিটালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি দেখে পশ্চিম মেদিনীপুরে সদর হাসপাতালে তাকে ট্রান্সফার করা হয়।
পল্টি সংস্থা কারীর পদক্ষেপ
এই ঘটনার কারণ জানতে চেয়ে ওই পোল্টি সংস্থাটি প্রথমে ওই বেলদা থানায় একটি চিঠি দেয় কিন্তু তার কোন সদুত্তর পায়নি তারা। এরপর তারা পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপারের কাছে চিঠি দিয়েও উত্তর পায়নি। এছাড়া তারা নবান্ন-তে একটি মেল করে কিন্তু তারও কোনো উত্তর পায়নি বলে পল্টি সংস্থাটাই জানিয়েছে। এরপরে পোল্টি সংস্থাটি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া-তে তাদের ইউনিয়ন নিয়ে একটি সভা করে এবং এবং সংস্থাটির চেয়ারম্যান সন্দীপ দাস সভা করে জানিয়ে দেন এটা একটি অত্যন্ত একটি নারকীয় ঘটনা।
তিনি আরো বলেন পোলটি ড্রাইভার ও গাড়ির যদি কোন প্রবলেম থাকে তাহলে অবশ্যই আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল কিন্তু তা না নিয়ে কেন ডাইভারকে এরকম মারধর ও মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হলো।। যার জন্য সে আজকে জীবন মরণের সঙ্গে লড়াই করছে । তাই আজ মধ্য রাত থেকে পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জায়গায় পোল্ট্রি সরবরাহ করা বন্ধ করে দেবে তারা।
পুলিশের অবস্থা সম্পর্কে পোল্ট্রিসংস্থা কারী চেয়ারম্যানের বক্তব্য
ওই পল্টি সংস্থার চেয়ারম্যান সন্দীপ দাস বলেন সারা রাজ্য জুড়ে সড়কে পুলিশের তোলাবাজি কিছুদিন বন্ধ হয়েছিল কিন্তু গত এক দেড় বছর নাগাদ ধরে আবার তোলাবাজি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পোল্ট্রি বোঝাই গাড়ি নিয়ে গেলে বৈধ সমস্ত ডকুমেন্টস থাকা সত্ত্বেও মোটা টাকা দাবি করা হয়। যা টোটালি অবৈধ। আর এর প্রতিবাদ করলেই কপালে জোটছে লাঞ্ছনা আর মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি। সন্দীপ দাস আরও বলেন রাজ্য সরকার এ তোলা আদায়কারী পুলিশদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নিলে সমগ্র রাজ্যজরে পোলটি সরবরাহ করা বন্ধ থাকবে।
সন্দীপ দাসের বক্তব্য সমস্ত বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও কেন পলটি সংস্থাকারীদের গাড়ি আটকানো হবে এবং কেনো গাড়ির ড্রাইভারকে হেনস্তা করা হবে? তার বক্তব্য এই ঘটনা নতুন নয় এর আগেও বহু ঘটনা এরকম ঘটেছে। তাই এর প্রতিবাদ না করলে এই ঘটনা আরো বাড়তেই থাকবে। তার বক্তব্য ওই গাড়ির ড্রাইভার এর কি অপরাধ ছিল যে তাকে এরকম ভাবে মেরে হসপিটালে ভর্তি করতে হলো? তাকে মারার অধিকার কোন আইনে লেখা আছে?
এই ঘটনা চিকেন লাভার্সদের হতাশা করতে পারে কারণ পশ্চিমবঙ্গে যদি সত্যিই মুরগির সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তাহলে মুরগির মাংসের আকাল দেখা দিতে পারে। সঙ্গে এটাও আমাদেরকে ভাবায় ওই ড্রাইভার আমাদের মতনই একজন সাধারণ মানুষ। চিকেন সরবরাহ করে অর্থাৎ ড্রাইভারি করে তার সামান্য কিছু উপার্জন হয়। তার কাছে যদি এরকম মোটা টাকা দাবী করা হয় তাহলে সে কোথা থেকে দেবে আর উপরন্তু যদি এইরকম পুলিশি অত্যাচার চলে তাহলে তার মতন সাধারণ মানুষ কি করবে? সংসার চালাতে গিয়ে তাকে আজকে মৃত্যুর মুখের সামনাসামনি হতে হয়েছে। তার কিছু হয়ে গেলে তার সংসারই বা কিভাবে চলবে? এইসব প্রশ্ন আমাদের সত্যিই খুব কষ্ট দেয়। দেখা যাক এর পরবর্তীকালে পোল্টি মুরগি সংস্থা ও সরকার কি পদক্ষেপ নেয়? তা আমারা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
( আরো পড়ুন-
ট্রেনে আগুন-শিয়ালদহ-ডায়মন্ড হারবার ট্রেনে আগুন-ট্রেন বন্ধ। Sealdah diamond harbour train fire
কোন মিউচুয়াল ফান্ড ভালো? সেরা ৭টি মিউচুয়াল ফান্ড ২০২৪- Best Mutual Fund
খুব কম টাকায় পান 5000 mAh ব্যাটারির মোবাইল- জানুন কিভাবে, Infinix Smart 8 HD Price in India )