গাজর অতি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ সবজি। গাজর english meaning carrot, আমাদের শরীরে গাজরের উপকারিতা অনেক রয়েছে।। গাজরের রেসিপি, যেমন-গাজরের হালুয়া, গাজর ভাজা, খিচুড়িতে গাজর এই খাবারগুলি আমাদের শরীরের জন্য খুবই স্বাস্থ্যকর। গাজর খাওয়ার উপকারিতা যেমন আছে তেমন গাজর খাওয়ার নিয়মও রয়েছে বেশ কতগুলি। সঠিক পদ্ধতিতে গাজর খেলে আমাদের শরীরে অনেক পুষ্টিগুণ বৃদ্ধি পায়। সঠিক পদ্ধতিতে গাজর না খেলে গাজরের অপকারিতা বেশি চোখে পড়ে। এছাড়াও গাজর কিভাবে খাওয়া যায় বা গাজর খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্বন্ধে আলোচনা করা হলো।
গাজর বিষয়ে সম্পূর্ণ তথ্য
গাজরের উপকারিতা
1.উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
গাজরের ভিটামিন ও মিনারেলস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। গাজরের সঙ্গে কয়েক কোয়া রসুন মিশিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ অতি সহজেই করা যায়। তাছাড়াও কাঁচা গাজর খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রিত হয়।
2.দাঁত ও দাঁতের মাড়ি শক্ত রাখতে
দাঁত কে সুস্থ সবল রাখতে গাজরের উপকারিতা-এর জুড়ি মেলা ভার। গাজরে থাকা প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম আমাদের শরীরে যেমন পটাশিয়ামের ঘাটতি মেটায় ঠিক তেমনি দাঁতের মাড়িকে শক্ত রাখতে এবং দাঁত থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করতে বহুলাংশে সাহায্য করে।
3.ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক হয় :
গাজরে থাকা বিভিন্ন মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন ক্যান্সার এর কোষ গুলির বিরুদ্ধে কাজ করে। গাজর আমাদের শরীরের নানাবিধ রোগ সারাতে সাহায্য করে।
4.ক্ষতপ্রাপ্ত কোষগুলিকে সবল রাখে
গাজরের উপকারিতা বলে শেষ করা যাবে না। গাজর শুধু শরীরের জন্য ভাল তাই নয় এটি আমাদের জন্য অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলোকে ঠিকঠাক করে।
4.দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে
গাজরে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। এই ভিটামিন এ আমাদের চোখের দৃষ্টির ক্ষমতা ঠিক রাখে। এমনকি চোখে ছানি পড়লে বেশি পরিমাণে গাজর খেলে ছানি পড়ার সম্ভাবনা বহুলাং সে কমে যায়।
5.নখ শক্ত রাখে
গাজরে থাকা সঠিক পরিমাণ মিরানের এবং ভিটামিন এ, সি এই ভিটামিন গুলি নখকে সবল রাখে এইভাবে গাজর আমাদের উপকার করে। যাদের নখ খুব সহজেই ভেঙে যায় তারা সারাদিনের খাদ্য তালিকায় একটি করে গাজর খেতে পারেন। তাহলে তাদের নখ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই থাকবে না।
6.ত্বক উজ্জ্বল রাখে
গাজরে থাকে সঠিক পরিমাণ মিনারেল এবং পটাশিয়াম। আমরা সবাই জানি ডাবের জলে বেশি পরিমাণ মিনারেল এবং পটাশিয়াম থাকার কারণে সেটি আমরা অনেকেই মুখে মেখে থাকি ব্রণ কিংবা সঠিক পরিমাণে ত্বকের উজ্জ্বলতা রাখতে।
এর থেকেও ভালো গাজরের উপকারিতা পেতে আপনারা প্রতিদিন একটি করে গাজর খেতে পারেন, যাতে আপনার ত্বক আরো সুন্দর উজ্জ্বল থাকে। এবং সেই সঙ্গে ত্বকের শুষ্কতা একেবারেই চলে যাবে এই গাজর খাওয়ার ফলেই।
7.বয়স্ক তার ছাপ দূর করে
আমরা সবাই একটি সুন্দর ত্বকের অধিকারী হতে চাই। সে জন্য ত্বকের পরিচর্যার পাশাপাশি প্রতিদিন কিংবা সপ্তাহে চারটি থেকে পাঁচটি গাজর খেলে ত্বকে বয়স্কতার ছাপ পড়বে না। কারণ গাজরে থাকে এন্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের ত্বককে উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে, বয়সের দাগ ছক থেকে ত্বককে সুন্দর রাখে।
8.কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ:
সব সময় পাওয়া সবজি গুলির মধ্যেগাজরের উপকারিতা-এর জুড়ি মেলা ভার। কোলেস্টেরল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে ক্ষেত্রে গাজর ভীষণভাবে সাহায্য করে। গাজরের মধ্যে থাকা পটাশিয়ামই এর মূল কারণ। গাজরে ক্যালরি এবং সুগারের উপাদান খুবই কম। এ ছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সাহায্য করে, ফলে ওজন কমে।
9.কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ
কাঁচা গাজর খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক। গাজরে উপস্থিত ভিটামিন এ লিভারে গিয়ে তাকে শরীর থেকে নানা ধরনের টক্সিন জাতীয় খারাপ উপাদান পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজরের এই উপাদান লিভার থেকে অতিরিক্ত চর্বি সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে। সেই সঙ্গে গাজরের ফাইবার পরিষ্কার রাখে এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর হাত থেকে আপনাকে রক্ষা করে।
10.কানের ব্যথার প্রতিকারে
কানের যন্ত্রণা হলে আমাদের শরীর কিংবা মন কোনটাই ভালো থাকে না। এই গানের যন্ত্রণা কমাতে গাজর খুব ভালো কাজ দেয়। কলা, গাজর, আদা এবং রসুন একসাথে পানিতে সেদ্ধ করে ১-২ ফোঁটা কানে ব্যবহার করলে ব্যথা কমে যাবে।
11.হার্টের সুরক্ষায় গাজরের উপকারিতা
গাজরে থাকা প্রচুর পরিমাণে ফাইবার ধমনির ওপর কোনো কিছুর আস্তরণ জমতে না দিয়ে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে, হার্টকে সুস্থ রাখে। গাজরের আলফা ক্যারোটিন ও এন্টিঅক্সিডেন্ট নামক উপাদান হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
12.গর্ভাবস্থায় গাজর খাওয়ার উপকারিতা
গাজরে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন মিনারেল থাকে এটি শরীরে পুষ্টিগুণ ঠিক রাখে। নিয়মিত গাজর খেলে গর্ভাশয় অবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীর সুস্থ থাকে এবং দুর্বলতা অনুভব কম করে। অনেক গর্ভবতী মহিলাই তাদের গর্ভাবস্থায় শিরায় টান লাগা বা পেশী শক্ত হয়ে যাওয়া অনুভব করে থাকতে পারেন। গাজর এসব নানাবিধ সমস্যার ভালো প্রতিষেধক।
13.বাত ব্যথায় নিয়ন্ত্রণ করে
বয়স কালে বাতের ব্যথা প্রায় প্রতিটি মানুষেরই হয়ে থাকে। বাতের ব্যথা খুবই যন্ত্রণাদায়ক। এই ক্ষেত্রেও গাজরের উপকারিতা অনেক। গাজরে থাকা বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি বাত ব্যথার ঝুঁকি কমিয়ে দিয়ে দেহকে ঠিক রাখে।
14. লিভারের সমস্যা সমাধানে
গাজরে প্রচুর পরিমাণে দ্রবণীয় ফাইবার পাওয়া যায় যা মলত্যাগের উদ্দীপনা সৃষ্টি করে লিভার ও কোলনকে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি করে গাজর সেবন করলে লিভারে প্রদাহ, ফোলা ভাব ও সংক্রমণ কমে যায়। গাজর লিভারের পিত্ত এবং হিমায়িত ফ্যাট কমাতেও সাহায্য করে।
15. রোধ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
এক গ্লাস গাজরের রস শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আশ্চর্যজনকভাবে বৃদ্ধি করে। গাজরের জুসে ভিটামিন ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের খনিজ, পটাশিয়াম, ফসফরাস ইত্যাদি থাকে যা হাড় গঠন, নার্ভাস সিস্টেমকে শক্ত করা ও মস্তিষ্কের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা।
আরও পড়ুন
হরলিক্স কি ক্ষতিকারক? জানুন হরলিক্স এর উপকারিতা ও অপকারিতা 10টি
গাজরের অপকারিতা
গাজরের যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন কিছু অপকারিতাও রয়েছে। যেমন-
1.বেশি পরিমাণে গাজর খেলে আপনার গ্যাস, ডায়রিয়া, পেট, পাকস্থলির পাচনজনিত ব্যাধি দেখা দিতে পারে।
2.বেশি পরিমাণে গাজর খেলে ত্বকে হলদে ভাব দেখা দেয়।
3. বেশি পরিমাণে গাজর খেলে ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে।
4.গরমে বেশি গাজর খেলে উচ্চরক্তচাপ এবং কম ঘুম হয়।
5. অতিরিক্ত পরিমাণ গাজর খেলে দাঁতের ক্ষয় হতে পারে।
গাজর কি ক্ষতিকর?
গাজর খাওয়া কি ক্ষতিকারক কিনা তার উত্তর ওপরের লেখাতে দেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন দয়া করে
Disclaimer: উপরোক্ত বিষয়গুলো মানতে sangbad10 কাউকে বাধ্য বা অনুরোধ করে না। নিজের বিচার বুদ্ধি সহযোগে সিদ্ধান্ত নিন। ব্যবহারিক প্রয়োগের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
Good