তুলসী পাতা সর্ব রোগের উপকারী পাতা। তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে অনেক। এই পাতা চেনে না এমন কেউ নেই। কিন্তু তুলসী পাতা খেলে কোন কোন উপকারগুলি পাওয়া যায় সেকথা প্রায় অনেকেরই অজানা। হিসেবে তুলসী পাতার ব্যবহার বেশ প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছে।
তুলসী পাতায় এন্টি অক্সিডেন্ট ও আন্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান রয়েছে, যা আমাদের শরীরের জন্য বিশেষ কার্যকরী একটি উপাদান। তুলসীর ভিটামিন সি, অ্যান্টি-ইনফ্লেমটরি ও অন্যান্য অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এ উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। তুলসী শরীরে কর্টিসোলের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে।
তুলসী পাতা সম্বন্ধে এই প্রতিবেদনের সংক্ষিপ্ত তথ্য
এ ছাড়া অতিরিক্ত উত্তেজনা ও চাপ থেকে মুক্তি দেয়। এই উপাদানগুলি আমাদের দেহের মারাত্মক মারাত্মক সব রোগ যেমন ডায়াবেটিস ক্যান্সার হৃদরোগ ইত্যাদি নানা রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের শরীরকে নিত্যদিন সুস্থ রাখে। বিভিন্ন সার্জারির পর বা কোনো ক্ষতস্থানে তুলসী পাতা বেটে লাগালে তা বেশ তাড়াতড়ি শুকিয়ে ওঠে।
প্রাচীন মনীষীদের মতে প্রতিদিন একটা করে বা দুটো করে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেলে নানা রোগ নিরাময় ঘটে। শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষের ঠান্ডা, সর্দি-কাশির ক্ষেত্রে তুলসী পাতা মহৌষধ।
বাচ্চার সর্দি-কাশি থাকলে আধা চা–চামচ মধুর সঙ্গে তুলসী পাতার রস মিশিয়ে খাওয়ালে কাশি কমে যাবে। বুকে কফ বসে গেলে সকালবেলা এক গ্লাস পানিতে তুলসী পাতা, আদা ও চা পাতা ভালো করে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে পান করুন, আরাম পাবেন। এ ছাড়া মাথাব্যথা কমাতে তুলসীর চা অনেক কার্যকরী। তুলসী পাতা ফুটিয়ে গড়গড়া করলে গলাব্যথায় আরাম পাওয়া যায়।
এটি নানা গুণে অনন্য বলেই হাজার বছর ধরে যোগ আছে ওষুধের তালিকায়। জেনে নিন তুলসি পাতার কিছু উপকারিতা সম্পর্কে-
তুলসী পাতার উপকারিতা
বন্ধ্যাত্ব রোগ নিরাময়ে
এখন এই বন্ধ্যাত্ব রোগটি অধিকাংশ নারীদের দেখা যায়। প্রতিদিন সকালবেলা পাঁচ থেকে ছটা তুলসী পাতা খালি পেটে খান। তাহলে বন্ধ্যাত্ব রোগটি বহু অংশেই কমে যাবে। আপনিও একটি ফুটফুটে সন্তানের জন্ম দিতে পারবেন।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে
আমাদের মানবজগতে ক্যান্সার এক মরণঘাতী অসুখ। এই অসুখ দূর করতে তুলসী পাতা অনেকাংশে সাহায্য করে। এই পাতায় আছে রেডিওপ্রটেকটিভ উপাদান যা টিউমারের কোষগুলোকে মেরে ফেলে। এতে থাকা নানা ধরনের ঔষধি উপাদান ক্যান্সারের বীজকে শরীরে প্রবেশ করতে দেয় না।
ক্যান্সারের বিরুদ্ধে তুলসী পাতা বিশেষ কাজ করে। অগ্নাশয়ে যে টিউমার কোষ দেখা দেয় তা দূর করতেও তুলসী পাতা দারুণ উপকারী। পাশাপাশি দূরে রাখে ব্রেস্ট ক্যান্সারও।
আপনি যদি সারাদিনে চারটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খান আপনার দেহে ক্যান্সার প্রতিরোধ হতে পারে।
সর্দি-কাশি কমিয়ে দেয়
বাচ্চা থেকে বুড়ো সবারই শীতকালে সর্দি-কাশি হেথছ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং হয়, এর থেকে একমাত্র মুক্তির উপায় হলেও তুলসী পাতা দিয়ে প্রতিদিন সকালবেলা চা খান। ঠান্ডা লাগলে অর্থাৎ সর্দি-কাশি হলে তুলসি পাতা খাওয়া হয় ওষুধ হিসেবে। সর্দি ও কাশি সারাতে এটি খুব দ্রুত কাজ করে।
বুকে হালকা কম বুঝলে নাকে সর্দি থাকলে প্রতিদিন সকালে ও বিকেলে তুলসি পাতা, আদা ও চা পাতা ভালোভাবে ফুটিয়ে তাতে মধু ও লেবু মিশিয়ে খেতে দিন। এতে দ্রুতই উপশম মিলবে।
তুলসী পাতা খেলে সারা বছরই সর্দি-কাশি হওয়ার সম্ভাবনা একেবারেই কমে যায়।
গলা ব্যথা দূর করে
অনেকেরই গলা ব্যথার সম্ভাবনা থাকে বিশেষত শীতকালে। আর গলা ব্যথা হলে আমাদের খেতে খুব অসুবিধে হয়। এর থেকে একমাত্র মুক্তির উপায় হলেও তুলসী পাতা।
আপনার গলা ব্যাথার সমস্যা থাকলে অতি অবশ্যই তুলসী পাতা খান। কারণ গলা ব্যথার সমস্যা দূর করতে তুলসী তুলসী পাতার কোন বিকল্প নেই। এমনকি কাশি কিংবা শ্বাসকষ্ট হলে তুলসী পাতা খেলে একেবারেই শ্বাসকষ্ট কমে যায়।
কয়েকটি তুলসি পাতা ফুটিয়ে সেই জলে দিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা দ্রুত সেরে যায়। তাছাড়া তুলসী পাতা মধু দিয়ে গরম জলে চা করে খান একেবারে গলা ব্যথা সর্দি কাশি দূর হয়ে যাবে।
ডায়াবেটিস দূরে রাখে
তুলসী পাতা তে থাকা ইনসুলিন ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। প্রতিদিন খাওয়ার আগে তুলসি পাতা খেলে রক্তে সুগারের মাত্রা কমে। তুলসি অ্যান্টি ডায়াবেটিক ওষুধের কাজ করে। তুলসিতে থাকা স্যাপোনিন, ত্রিতারপিনিন ও ফ্ল্যাবোনয়েড ডায়বেটিস রোধ করতে কার্যকরী।
তুলসী পাতার অপকারিতা
সব সব জিনিসেরই উপকারিতা ও অপকারিতা দুই রয়েছে।
তুলসী পাতা আমাদের শরীরে নানা ভাবে কার্যকরী।, ঠিক তেমনি কয়েকটি অপকারিতাও রয়েছে তুলসী পাতার।
রক্ত চাপ কমাতে
অতিরিক্ত রক্তচাপ কমাতে তুলসীপাতা বহুলাংশের কার্যকরী। কিন্তু যাদের রক্তচাপ কম তারা তুলসী পাতা সেবন করলে তাদের রক্তচাপ তুলনামূলকভাবে আরো কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তাই যাদের রক্তচাপ কম তারা কিন্তু তুলসী পাতা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
রক্তপাতের সমস্যা দেখা দিতে পারে
অতিরিক্ত তুলসী পাতা খেলে রক্তপাতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। নানা ধরনের রক্তপাত শরীর থেকে ক্ষরণ হলে অবশ্যই আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তুলসী পাতা খাবেন।
Disclaimer: উপরোক্ত বিষয়গুলো মানতে sangbad10 কাউকে বাধ্য বা অনুরোধ করে না। নিজের বিচার বুদ্ধি সহযোগে সিদ্ধান্ত নিন। ব্যবহারিক প্রয়োগের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
1 thought on “তুলসী পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা”