তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা ১৫ টি

তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে নানা ধরনের। তেজপাতা আমাদের নিত্য ব্যবহারে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ যেমন-চুলের জন্য তেজপাতার উপকারিতা, তেজপাতার চা মানসিক অবসাদ দূর করে, তেজপাতা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক,তেজপাতা দিয়ে মশা তাড়ানোর উপায় অতি সহজ। তেজপাতা হলো একটি ঔষধি পাতা। প্রায় প্রতিটি রান্নাঘরেই তেজপাতা একটি বিশেষ উপাদান। এই তেজপাতা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে শরীরকে সুস্থ রাখে। তেজপাতা রান্নাতে দিলে একদিকে যেমন শরীর সুস্থ থাকবে, তেমনি রান্নার সুগন্ধ বজায় রাখতে সাহায্য করবে। এই নিয়মগুলি অবশ্যই মেনে চলুন

তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্বন্ধে এই আর্টিকেল এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ

তেজপাতা কি ধরনের হয়?

তেজপাতার প্রায় তিন হাজার প্রজাতি রয়েছে। তেজপাতা বেশি পাওয়া যায়, দক্ষিণ ও উত্তর আমেরিক, পূর্ব এশিয়া পাওয়া যায়। 

তেজপাতা একটি অতি সুগন্ধী পাতা। এটি লরাস পাতার অন্তর্গত। তেজপাতা প্রায় এক হাজার বছর ধরে খাবার এবং ঔষধে ব্যবহার হয়ে আসছে। প্রাচীনকালের মুনি ঋষিরা ও এই তেজপাতার ব্যবহার করতেন।

তেজপাতা সাধারণত মসলার মধ্যেই পড়ে। এই পাতা অপরিহার্য তেল এবং ঐতিহ্যগত ঔষধে ব্যবহৃত হয়। তেজপাতার দুটি প্রজাতি আমরা ব্যবহার করে থাকি। 

প্রথমটি হলো এল. নোবিলিস এবং অন্যটি হলোলরাস আজোরিকা। তেজপাতা কে শুকনোর পর ব্যবহার করলে এর উপকারিতা ও বহুগুণ থাকে। 

তেজপাতা কি কি ভাবে খেতে পারেন?

প্রাচীনকালে নানা সুগন্ধি দ্রব্য প্রস্তুত করতে তেজপাতা ব্যবহার করা হতো। এছাড়াওস্যুপ, পায়েস, ডাল, পোলাও ও অন্যান্য সিদ্ধ জাতীয় খাবারে সুগন্ধ যোগ করতে এ পাতা ব্যবহার করা হয়। 

তেজপাতার পুষ্টিগুণ

তেজপাতায় রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, আয়রন, খাদ্য শক্তি, ফাইবার, ভিটামিন সি, ফ্যাট ও প্রোটিন ইত্যাদি নানা ধরনের পুষ্টিগুণ। 

চলুন তাহলে দেখে নেওয়া যাক তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা কি কি রয়েছে। 

তেজপাতা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক
তেজপাতা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক

তেজপাতার উপকারিতা গুলি হল-

. মানসিক রোগ নিরাময়ে সহায়ক তেজপাতা

দীর্ঘদিন মনের অশান্তি থাকায় মানুষের মনে শান্তি থাকে না।  তাই বর্তমান যুগে মানুষ নানা সমস্যার কারণে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। মানসিক সমস্যার কারণে আমরা নানা ধরনের ঔষধ সেবন করি। আপনি যদি মানসিক সমস্যার প্রথম ধাপে তেজপাতা ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মানসিক সমস্যা অতি সহজেই নিরাময় হবে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: তেজপাতা কে তিন চার দিন রোদে শুকনো করে নিতে হবে।তারপর মিক্সিতে তেজপাতা কে ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে। এই গুঁড়ো করা তেজপাতা তরকারিতে দিয়ে কিংবা জলে সিদ্ধ করে করে খেলে আপনার নানা রকম মানসিক রোগ দূর হবে।

২. তেজপাতা ওজন কমাতে সহায়তা

তেজপাতা ওজন কমাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে। তেজপাতা এমন একটি ভেষজ উপাদান যা খিদে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। তেজপাতা খেলে আমাদের শরীরের ক্যালরি ক্ষয় হয় এবং শরীর সতেজ থাকে এর ফলে আমাদের ওজন শরীরের তুলনায় ঠিক থাকে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: সকালে ১ কাপ গরম জলে একটি তেজপাতা দিয়ে ২ থেকে ৩মিনিট ভালো করে ঢাকা দিয়ে ফুটিয়ে নিন। ফোটানো এই জলটি সকালে সেবন করুন। এক সপ্তাহের মধ্যেই দেখবেন আপনার শরীরের মেদ এবং ক্যালরি ক্ষয় হয়েছে এবং শরীরটা আগের থেকে অনেক সতেজ হয়ে উঠেছে।

৩. তেজপাতা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক

ক্যান্সার নামক এই বিপদ জনক মরণ রোগটি নিয়ে বিজ্ঞান বিভিন্ন রকম গবেষণা করে চলেছে। কিন্তু এই রোগের সঠিক কোন চিকিৎসা এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। 

খাদ্য তালিকায় কিছু খাবার খাওয়া মেনে চললে এবং নিয়মিত কিছু যোগাসনের মাধ্যমে শরীরে ক্যান্সার রোধ করা যায়|তেজপাতার মধ্যেও ক্যান্সার প্রতিরোধ উপাদান রয়েছে।

তেজপাতা ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধিতে বাঁধা সৃষ্টি করে। বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, তেজপাতার মধ্যে যে বৈশিষ্ট্য আছে, তা কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

অনেক গবেষণা করে দেখা গেছে, তেজপাতার নির্যাসে অ্যান্টিকার্সিনোজেনি প্রভাব আছে। যা স্তন ক্যান্সারের বৃদ্ধিতে বাঁধা দিতে পারে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: বিভিন্ন তরকারিতে যেমন ডাল, সেদ্ধ খাওয়ার ইত্যাদি নানা খাওয়ার এ তেজ পাতাগুলো করে কিংবা গোটা তেজপাতা দিন। সেই তরকারি খান। এতে আপনার ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা অনেক কমে যাবে।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে তেজপাতা

বর্তমানে প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই ডায়াবেটিস রোগী রয়েছে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে কিডনির উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে। তেজপাতা রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণ কমিয়ে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে শরীরকে সুস্থ রাখে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: লিকার চায়ের সাথে এক চামচ গুঁড়ো তেজপাতা মিশিয়ে নিন কিংবা একটা গোটা তেজপাতা দিয়ে লিকার চাকে দু মিনিট ফুটিয়ে নামিয়ে নিন। হাব উষ্ণ গরম থাকতে থাকতে এই চাটি সেবন করুন। অতি সহজেই আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত হবে।

৫. তেজপাতা হজমে সাহায্য করে

তেজপাতা আপনার স্বাভাবিক হজমশক্তি ফিরিয়ে আনবে। কোষ্ঠকাঠিন্যর মহৌষধি রূপে কাজ করে এই তেজপাতা| এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত টক্সিন বের করে দেয়। অতিরিক্ত প্রস্রাবের সমস্যা কমায় ও হজম রস তৈরিতে এটি উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে। তেজপাতায় থাকা এনজাইম দ্রুত খাবার ভাঙতে পারে ফলে যারা অন্ত্রের সমস্যায় ভুগছেন তাদের জন্য তেজপাতা অনেক উপকারী।

কিভাবে ব্যবহার করবেন তেজপাতা : রাত্রিবেলা দুটো তেজপাতা এক গ্লাস জলে ভিজিয়ে রাখুন। সকালবেলা সেই জল থেকে তেজপাতা তুলে নিন। সারারাত ভেজানো তেজপাতা জলটি খালি পেটে সেবন করুন| তিন চার দিনের মধ্যেই দেখবেন আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, হজমের সমস্যা দূর হয়ে গেছে। আপনার যদি বেশি গ্যাস্টিক কিংবা হজমের সমস্যা থাকে তাহলে সপ্তাহে ৭ দিনই সেবন করতে পারেন।

৬. চুলের যত্নের তেজপাতার উপকারিতা

চুলের সব রকম সমস্যা দূর করতে তেজপাতা বিশেষ কার্যকরী একটি উপাদান।nচুলের গোড়াকে শক্ত ও মজবুত করতে তেজপাতায় থাকা ভেষজ উপাদান যেমন আন্টি ব্যাকটেরিয়া ও অ্যান্টি ছত্রাক বিশেষ সাহায্য করে। চুলের গোড়াকে একদিকে যেমন শক্ত করে অন্যদিকে চুলকে বিভিন্ন ছত্রাক, ব্যাকটেরিয়া, পোকার হাত থেকে রক্ষা করে এই তেজপাতা।

কিভাবে ব্যবহার করবেন তেজপাতা : মাথায় খুশকি হলে তেজপাতা ভেজানো জল মাথায় ঢালুন, এই জল দিয়ে চুলের গোড়া ভালো করে ধুয়ে নিন। মুহূর্তের মধ্যে চলে যাবে খুশকি এবং চুলের গোড়া মজবুত হবে চুল মসৃণ ও উজ্জ্বল ঝলমলে হয়ে উঠবে।

৭. তেজপাতা কোলেস্টেরল ও হার্ট অ্যাটাকের উপকারী

তেজপাতা আমাদের শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে, হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকে দূরে সরিয়ে আমাদের সুস্থ রাখে। তেজপাতার মধ্যে প্রাপ্ত ইথানল নির্যাস কোলেস্টেরলের সিরাম স্তর কমাতে সাহায্য করে।

তেজপাতার মধ্যে থাকা এই নির্যাসটি আমাদের খারাপ কোলেস্টেরল কমিয়ে ভালো কোলেস্টেরল বাড়িয়ে আমাদের শরীরকে নানা রকম রোগের হাত থেকে রক্ষা করে এমনকি হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা আমাদের শরীর থেকে দূরীভূত করে।

তেজপাতার মধ্যে ক্যাফেইক এসিড থাকে যা আমাদের হৃদপিণ্ডকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রিত হলেই আমাদের হৃদপিণ্ড ঠিক ভাবে কাজ করে এবং আমাদের শরীর সুস্থ থাকে।

কিভাবে ব্যবহার করবেন: প্রতিদিন সন্ধ্যেবেলা এক গ্লাস গরম জলে তেজপাতা 5 মিনিট ভিজিয়ে রাখুন এবং হাব উষ্ণ গরম থাকতে থাকতে এই তেজপাতা জলটি খেয়ে নিন। তাহলে আপনার হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমে যাবে।

.বাতে উপশম পেতে তেজপাতা

বাতের উপশমে তেজপাতা খুব উপকারী। তেজপাতায় থাকা ভেষজ উপাদান গাট কিংবা বাতের ব্যথা একেবারেই কমিয়ে দেয়।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: সন্ধিস্থলের বাতে বা গেঠের বাতে তেজপাতার ছাল গুঁড়া করে প্রলেপ দিলে উপকার পাওয়া যাবে।

৯. ত্বকের যত্নে তেজ পাতার উপকারিতা

তেজপাতা ত্বকের যত্নের জন্য বিশেষ উপকারী একটি উপাদান। তেজপাতার অপরিহার্য তেল প্রসাধনী শিল্পে, ক্রিম এবং সাবান তৈরিতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধ জাত প্রসাধনী তৈরি করতেও তেজপাতা ব্যবহার করা হয়।

এটি ত্বকে গভীরভাবে পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। কারণ এর মধ্যে আছে অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট বৈশিষ্ট্য। এছাড়াও তেজপাতাকে ত্বকের ফুসুরি, কালো দাগ ছোপ, ত্বকের চুলকানি নানা ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এই তেজপাতা।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: সাত থেকে আটটা কাঁচা তেজ পাতা নিন। খানিক পরিমান জল নিয়ে ভালো করে তেজপাতা ধুয়ে নিন। ধুয়ে রাখা তেজপাতা মিক্সি কিংবা সিলে বেটে নিন। বাটা এই তেজপাতা যেখানে কালো ছোপ হয়েছে কিংবা ফুসকুড়ি,ব্রণ বা উজ্জ্বলতা হারিয়ে গেছে সেখানে এই পেস্টটি লাগান। ১৫ থেকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে দিন।

তারপর হ্যাঁ উষ্ণ গরম জল দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিন হাফ। এইভাবে সপ্তাহে তিন দিন কিংবা চার দিন ব্যবহার করলেই আপনার ত্বক উজ্জ্বল ফর্সা হয়ে উঠবে।

১০.তেজপাতা ক্ষত নিরাময়ে সহায়ক

তেজপাতা ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, তেজ পাতার নির্যাসের দানাদার টিস্যুর বিকাশের সাহায্য করতে পারে। অর্থাৎ সংযোগ করে টিসু যা ক্ষত নিরাময়ের সাহায্য করে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: বাটা তেজপাতা ক্ষত জায়গায় লাগিয়ে এক ঘন্টা রেখে দিন। তারপর পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ক্ষত জায়গা খুব ভালোভাবেই সেরে উঠবে।

১১. অনিদ্রা দূর করতে তেজপাতার উপকারিতা

বর্তমান যুগে একটি সমস্যা এখন ঘরে ঘরে। এই সমস্যাটি হলো নানা কাজের জন্য দীর্ঘদিন ধরে আমাদের ঠিক করে ঘুম হয় না| এমনকি সারাদিন শেষেও আমাদের কাজ শেষ না হওয়ার কারণে চারিপাশের নানা রকম প্রেসার আমাদের মাথায় থাকে। এই প্রেসারের কিংবা দুশ্চিন্তার কারণেও আমাদের দীর্ঘদিন ধরে ঘুম হয় না।

আর এই অনিদ্রার কারণে আমাদের শরীরে নানা রকম হরমোন ক্ষরণের সমতা ঠিকভাবে বজায় থাকে না। আর হরমোন ক্ষরণই যেহেতু আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রিত করে তাই ঠিকভাবে হরমোন ক্ষরণ না হলে আমাদের শরীরের নানা রোগ দেখা দেয়। তেজপাতা অনিদ্রা কিংবা মানসিক অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: বাড়ির যে রুমে আপনি ঘুমোন সেই রুমে ঘুমানোর পাঁচ থেকে দশ মিনিট আগে একটা পাত্রে তেজপাতা নিয়ে আগুন ধরিয়ে ধোঁয়া করে নিন। ৫-৬ মিনিট এইভাবে ধোঁয়া দিন। তারপরে ঘুমোন। সারারাত আপনার ঘুম খুব ভালো হবে।

১২.তেজপাতা কিডনির সমস্যা প্রতিরোধে সাহায্য করে

তেজপাতার নির্যাস কিডনি ও মূত্রনালির পাথরের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে। 

তেজপাতার নির্যার সরাসরি কিডনির পেশী শিথিল করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে লরিক অ্যাসিড আছে, যা কিডনির সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: ২ টি তেজ পাতা ভিজানো জল খেলে ঠিকভাবে মুত্র ত্যাগ হয় এবং এর ফলে আমাদের কিডনি ঠিকভাবে কাজ করে।

১৩.দাঁতের জন্য উপকারী তেজপাতা

তেজপাতা দাঁতের জন্য বিশেষ কার্যকারী একটি উপাদান। তেজপাতা গাছের ডালে ও পাতায় উদ্বায়ী তেল থাকে। যেটা আমাদের শরীরের রক্ত প্রবাহকে উন্নত করতে সাহায্য করে এবং ঠিকভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে। 

এছাড়াও তেজপাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণভিটামিন সি, যা মাড়িকে শক্ত করতে সাহায্য করে। তেজপাতার ছাই দিয়ে ব্রাশ করলে মাড়ী শক্ত হয়। তেজপাতা মুখের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া বিনাশ করতে সাহায্য করে। 

তেজ পাতার অপরিহার্য তেল মুখের মধ্যে থাকা বিষাক্ত ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করে, দাঁতকে শক্ত ও মজবুত রাখে ‌।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: তেজপাতা পুড়িয়ে ছাই তৈরি করুন। সেই ছাই দিয়ে দাঁত মাজুন দাঁতে ব্যথা থাকলে সেই ব্যথা দূর হবে।

১৪.শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা কমাতে তেজপাতার উপকারিতা

শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা দূর করতে তেজপাতার ভূমিকা অপরিসীম। শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, বহুদিনের পুরনো কাশি ইত্যাদি সারাতে এই তেজপাতার জুড়ি মেলা ভার। তেজপাতার মধ্যে বিশেষ ধরনের যৌগ থাকে, যা ব্যথা বেদনা কমাতে সাহায্য করে ও শরীরকে সুস্থ রাখে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: তেজপাতা নির্যাস এর তেল বুকে ভালো করে আলতো হাতে মালিশ করবেন। তাহলে শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা অনেকাংশেই দূর হবে।

১৫.নখের সমস্যা দূর করতে তেজপাতা

তেজপাতায় থাকা ভেষজ গুন নখের বিভিন্ন রোগ দূর করে নখে দ্রুত বৃদ্ধি করে।

তেজপাতা কিভাবে ব্যবহার করবেন: দুটো তেজ পাতা একটা ভিটামিন ই ক্যাপসুল এই দুটো উপকরণ ভালো করে পেস্ট করে নিন। এই পেস্টটি নখের চারপাশে দু মিনিট মাসাজ করুন।

তেজপাতার অপকারিতা

তেজপাতার অপকারিতা গুলি হল-

  1. গর্ভাশয় অবস্থায় তেজপাতা খেতে হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।
  2. তেজপাতার অনেক গুণাগুণ থাকা সত্ত্বেও তেজপাতায় এলার্জি জাতীয় উপাদান রয়েছে। তাই যাদের অ্যালার্জি আছে তারা তেজপাতা ব্যবহার করা থেকে রত থাকুন।
  3. যাদের হার্টের রোগ বেশি আছে, তারা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তেজপাতা খাবেন।
  4. যাদের চোখের বেশি সমস্যা আছে তারা নিকটবর্তী চোখের ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তেজপাতা ব্যবহার করবেন।

তেজপাতায় রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গুনাগুন, কিন্তু সবকিছু জিনিসেরই উপকার ও অপকার থাকে সেটা নিয়েই আজকে আমি আপনাদের সাথে বিস্তৃত আলোচনা করলাম।

আর্টিকেলটি পুরোপুরি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

তেজপাতা কি প্রতিদিন খাওয়া যায়?

প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় তেজপাতা রাখলে উপরের সুফল গুলো অবশ্যই আপনি পাবেন।

Disclaimer: উপরোক্ত বিষয়গুলো মানতে sangbad10 কাউকে বাধ্য বা অনুরোধ করে না। নিজের বিচার বুদ্ধি সহযোগে সিদ্ধান্ত নিন। ব্যবহারিক প্রয়োগের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

শেয়ার করুন:
Titli Ray

আমি Titli Ray,,আমি ২০১৭ সাল থেকে লেখালেখির সঙ্গে এবং ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে জড়িত ও ভিডিও তৈরি করি। আমি আপনাদেরকে আমার অভিজ্ঞতা ও তথ্য শেয়ার করব। ধন্যবাদ।

2 thoughts on “তেজপাতার উপকারিতা ও অপকারিতা ১৫ টি”

Leave a comment