আর কার সাংসদ পদ খারিজ করা হবে? মহুয়া মৈত্র ভাইরাল নিউজ

মহুয়া মৈত্র  হলেন একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ ও প্রাক্তন বিনিয়োগ ব্যাংকার। তিনি পশ্চিমবঙ্গের কৃষ্ণনগর থেকে ১৭তম লোকসভার সংসদ সদস্য। তিনি ২০১৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ভারতীয় সাধারণ নির্বাচনে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দলের প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন এবং এই আসনে জয় করেছিলেন।

মহুয়া মৈত্র ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত করিমপুরের প্রতিনিধিত্বকারী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন, এবং গত কয়েক বছর ধরে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস-এর সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় মুখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনীতিতে আসার আগে তিনি একজন বিনিয়োগ ব্যাংকার ছিলেন। মৈত্রকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছিল এবং লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।ডিসেম্বর ২০২৩-এ “ক্যাশ ফর কোয়েরি” দুর্নীতির ঘটনা এবং ঘুষ গ্রহণের সাথে তার সংযোগের কারণে।

মহুয়া মৈত্রের জীবনী

মৈত্র ১২ ই অক্টোবর ১৯৭৪ সালে আসামের কাছার জেলার লাবাকে দ্বীপেন্দ্র লাল মৈত্রের কাছে জন্মগ্রহণ করেন । তিনি একজন হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার থেকে এসেছেন এবং তার একটি বোন রয়েছে। 

মহুয়া মৈত্র কলকাতার গোখলে মেমোরিয়াল গার্লস স্কুলে গিয়েছিলেন । তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের মাউন্ট হলিঅক কলেজ সাউথ হ্যাডলি থেকে ১৯৯৮ সালে অর্থনীতি এবং গণিতে স্নাতক হন । এবং তারপরে উচ্চশিক্ষায় নিযুক্ত হন । 

মৈত্রা নিউ ইয়র্ক সিটি এবং লন্ডনে জিপিমরগান চেজের জন্য বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসাবে কাজ করেছিলেন । তারপর একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে রাজনীতিতে যোগদান করেন।

মহুয়া মৈত্রের রাজনৈতিক জীবন

তিনি ভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশের জন্য 2009 সালে লন্ডনের জেপিমরগান চেজেরভাইস-প্রেসিডেন্টের পদ ছেড়ে দেন । পরবর্তীকালে, তিনি ভারতীয় যুব কংগ্রেসে যোগ দেন, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দলের যুব শাখা যেখানে তিনি “আম আদমি কা সিপাহি” প্রকল্পে রাহুল গান্ধীর অন্যতম বিশ্বস্ত হাত ছিলেন । ২০১০সালে, তিনি সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ,পার্টিতে চলে যান। তিনি ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার করিমপুর কেন্দ্র থেকে তিনি নির্বাচিত হন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার অন্তর্ভুক্ত কৃষ্ণনগর থেকে ১৭তম লোকসভার সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। 

১৩ ই নভেম্বর ২০২১ শে, ২০২২ সালের গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য এবং দলকে সব রকম ভাবে প্রস্তুত করার জন্য তাকে টিএমসি পার্টির গোয়া ইনচার্জ নিযুক্ত করা হয়েছিল । এখান থেকেই তার রাজনীতিবিদ হয়ে ওঠার যাত্রা শুরু হয়।

মহুয়া মৈত্র ও মামলা 

মহুয়া মৈত্র ভারতীয় জনতা পার্টির এমপি এবং এবং কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক বাবুল সুপ্রিয় বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। একটি জাতীয় টেলিভিশন বিতর্কের সময় মহুয়া মৈত্র “তার বিনয় অবমাননার” অভিযোগে একটি পুলিশি অভিযোগ দায়ের করেন বাবুল সুপ্রিয় এর বিরুদ্ধে। অভিযোগটি পরে কলকাতা হাইকোর্ট খারিজ করে দেয়। কয়েকদিন পরে, বাবুল সুপ্রিয় ও মহুয়া মৈত্র এবং টিএমসি সাংসদ সৌগত রায় এবং তাপস পাল কে রোজ ভ্যালি ফার্ম কেলেঙ্কারিতে জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। [ পরে,তাকে মানহানি করার অভিযোগে তার বাড়িতে আইনি নোটিশ পাঠান।

২০২০ সালের জানুয়ারিতে,  জি মিডিয়া সাংবাদিকদের সম্বোধন করার সময় চ্যানেলের বিরুদ্ধে দৃশ্যত অবমাননাকর বিবৃতি দেওয়ার জন্য মৈত্রার বিরুদ্ধে একটি মানহানিকর মামলা দায়ী করেন। নানা রকম ভাবে হেনস্তার পর পরবর্তীকালে মহুয়া মৈত্র কে জামিন দেওয়া হয়েছিল এবং দিল্লির একটি আদালত তাকে বিচারের মুখোমুখি করেছিল। পরে তিনি মামলায় জয়লাভ করেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খারিজ হয়ে যায়।

নানা রাজনৈতিক সমস্যা

২০১৯ সালে জুন মাসে মহুয়া মৈত্র ফ্যাসিবাদের পাঁচটি লক্ষণ তুলে ধরেন। যেগুলো তিনি দাবি করেছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের অধীনে ভারতে উপস্থিত রয়েছে । তার বক্তৃতা সংসদে “আপত্তিকর” এবং সংসদীয় বিধি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করে হাউসে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল । কারণ এতে “উচ্চ কর্তৃপক্ষ” একজন ব্যক্তির উল্লেখ করা হয়েছিল। এরকম নানা ঘটনা তিনি সংসদে উপস্থিত থাকাকালীন করেছেন।

মহুয়া মৈত্রের অশ্লীল দাবি

ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভ ইস্টে, দেবী কালীকে সিগারেট ধূমপান করা দেখানো একটি ফিল্মের পোস্টারে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। মৈত্রা বলেছিলেন, “আমার কাছে কালী একজন মাংস খাওয়া, মদ-গ্রহণকারী দেবী। আমাদের মেয়েকে যেমন লক্ষী ভাবা উচিত তেমনি কালি ভাবা উচিত এটাই তার দাবি। মহুয়া মৈত্রের এই কথাটিকে নানা মানুষ ঠিক বলে পরিগণিত করেছেন। দলের কিছু মানুষ মহুয়াকেএই কথাটি বলার জন্য বাহবা দিয়েছেন।

সাংসদ পদ থেকে বহিষ্কার

মহুয়া মৈত্র কে সংসদ পদ থেকে কেন বহিষ্কার করা হলো? এ নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা। ১৪ ই অক্টোবর ২০২৩-এ, সুপ্রিম কোর্টেরআইনজীবী জয় অনন্ত দেহরায় মৈত্রাকে দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগে একটি এফআইআর সহ সিবিআইকে একটি অভিযোগ পাঠান। অভিযোগটি লোকসভার স্পিকার এর কাছে জমা পড়ে। দেহদ্রায় অভিযোগ করেছেন যে, মহুয়া মৈত্র আধুনিক গ্রুপের প্রতিদ্বন্দ্বী সংগঠনের প্রধান হিরানন্দানির দর্শনকাছ থেকে অর্থ এবং বিভিন্ন জিনিস পেয়েছিলেন। পরবর্তীকালে মহুয়া মিত্রতা অস্বীকার করেন।

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে। মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলার সুযোগ দেওয়া হয়নি, কেবল এথিক্স কমিটির সুপারিশে মান্যতা দিয়েই তাঁর সাংসদ পদ খারিজ হয়েছে বলে সোচ্চার হয়েছে তৃণমূল থেকে অবিজেপি সমস্ত দলই। কিন্তু, এবার মহুয়ার রাজনৈতির ভবিষ্যৎ কী হবে? মহুয়া মৈত্র কি আর সংসদ পদে নিযুক্ত হতে পারবেন?

মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এরকম কাজ যারা করবেন মহুয়া মৈত্র এর পর তাদের ও সংসদ পদ খারিজ করা হতে পারে।

মহুয়া মৈত্রের বিবাহ

ডেনিস ফাইন্যান্সার লার্স ব্ররসনের সাথে বিবাহ করেছিলেন , যার সাথে পরে তিনি বিবাহবিচ্ছেদ করেছিলেন। বিচ্ছেদের আগে তিনি প্রায় তিন বছর ধরে অ্যাডভোকেট জয় অনন্ত দেহদরয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন। মহুয়া মৈত্রের বৈবাহিক সম্পর্ক নিয়ে নানা সমালোচনা চলেছে প্রতিনিয়ত, এই সমালোচনা কি তাহলে সত্যিই?

শেয়ার করুন:
Titli Ray

আমি Titli Ray,,আমি ২০১৭ সাল থেকে লেখালেখির সঙ্গে এবং ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে জড়িত ও ভিডিও তৈরি করি। আমি আপনাদেরকে আমার অভিজ্ঞতা ও তথ্য শেয়ার করব। ধন্যবাদ।

1 thought on “আর কার সাংসদ পদ খারিজ করা হবে? মহুয়া মৈত্র ভাইরাল নিউজ”

Leave a comment