বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলায় প্রথম ছিকর অর্থাৎ মাটির বিস্কুট বা ডুকলা বা হাইতির মাটির বিস্কুট একসময় দেশে ব্যাপক প্রচলন ছিল। প্রকৃতপক্ষে এই বিস্কুট আফ্রিকার দরিদ্র মানুষেরা খেতো। সময়ের সাথে সাথে এ বিস্কুট বর্তমানে লুপ্তপ্রায়। সাম্প্রতিক এক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশেও এই মাটির তৈরি বিস্কুট প্রস্তুত হচ্ছে ও দরিদ্র মানুষেরা খাচ্ছে।
মাটির বিস্কুট সম্বন্ধে এই আর্টিকেল এর সংক্ষিপ্ত বিবরণ
মাটির বিস্কুটের স্বাদ কেমন?
এখন মনে হতে পারে মাটির বিস্কুট খেতে কেমন অর্থাৎ এর স্বাদ কেমন কারণ আমরা জানি মাটি খেতে মোটেই ভালো নয়। মুখে মাটি পড়লে আমরা তখনই জল দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলি। তবে এখানে বলে রাখা প্রয়োজন মাটির তৈরি বিস্কুট খেতে পুরোপুরি মাটির মতো নয়। কারণ মাটির সঙ্গে থাকে গোলাপ জল, আদার রস, চিনি জাতীয় দ্রব্য ফলে এর টেস্ট বা স্বাদ অনেকটাই বদলে যায়।
মাটির বিস্কুট তৈরির উপাদান
এটেল মাটি, গোলাপজল, আদার রস, গুড় বা চিনি ইত্যাদি উপাদান প্রয়োজন হয়
মাটির বিস্কুট তৈরির পদ্ধতি
ভালো মানের এটেল মাটি সংগ্রহ করে সারারাত জলে সেটাকে ভিজিয়ে রাখতে হয়। তারপর গোলাপজল আদার রস ও স্বাদমতো গুড় বা চিনি মিশিয়ে ভালো করে মিশ্রণ করে বিস্কুটের মতন আকার দিয়ে তাকে রোদে শুকাতে হয়। এবার তৈরি হয়ে গেল মাটির তৈরি বিস্কুট।

“ছিকর” নামের উৎপত্তি
মাটির তৈরি বিস্কুটের অপর এক বিখ্যাত নাম “ছিকর”। এই “ছিকর” শব্দটি এসেছে ফারসি শব্দ “ছিয়া” যার অর্থ “কালো” এবং “কর” যার মানে “মাটি” এই দুটি শব্দ থেকে। ছিয়াকর শব্দটিই পরে ছিকর হিসেবে পরিচিতি পায়।
মাটির বিস্কুট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য
২০ শতকের শেষের দিকে বাংলাদেশের হবিগঞ্জ জেলায় মাটির তৈরি বিস্কুট প্রচলন হলেও এ বিস্কুট প্রকৃতপক্ষে আফ্রিকার হতদরিদ্র মানুষেরা খেত। বাংলাদেশও পরবর্তীকালে এই বিস্কুট বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়ে, শুধু তাই নয় গর্ভবতী মায়েরাও এই বিস্কুট খেত।
যদিও এই বিস্কুটের খাদ্যগুনাগুন তেমন কিছুই নেই। তবে এটা সম্পর্কে অনেকের ধারণা আছে যে এ বিস্কুটে অনেক খাদ্য গুণআছে। এই মাটির তৈরি বিস্কুট গুলো দেখতে অনেকটা কালো রঙের হয়, কেননা রোদে শুকানোর পর এই বিস্কুট আগুনেও পোড়ানো হয়। মানুষ ক্ষুধার জ্বালা মেটাতে এই ধরনের বিস্কুট খেতে বাধ্য হত। আবার অনেকে শখ করেও এই বিস্কুট খেত।
মাটির বিস্কুট খাওয়া কি স্বাস্থ্যসম্মত?
মাটির বিস্কুট খাওয়া মোটেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। কারণ মাটি মানুষের খাদ্যদ্রব্য নয়।